শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
চতুর্থ ধাপে স্থানীয় সরকার পরিষদের পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শংকামুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষে মাঠে নেমেছে বিজিব, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। বহিরাগতদের শহর ছাড়তে নির্দেশ প্রদান সহ সকল ধরনের ইঞ্জিন চালিত যানের উপর নির্বাচনী এলাকায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত মাইকিং করা হচ্ছে ইসি’র পক্ষ থেকে।
স্থানীয় ইসি অফিস সূত্র জানায়, ইভিএম পদ্ধতিতে কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ইসি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের শংকামুক্ত পরিবেশে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানে শহরে কয়েক প্লাটুন বিজিব, র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে মোবাইল ও ষ্ট্রাইকিং টিম কাজ শুরু করেছে। নির্বাচন আইন পরিপন্থী কোন কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষনিক শাস্তি নিশ্চিতে মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত।
এদিকে গত ক’দিন বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর একাধিক হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে বেশ ক’জন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও কর্মী সমর্থকদের একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়া নিয়ে শংকা দেখা দেয় ভোটারদের মাঝে। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারনায় বাঁধা ও কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগে পৃথক সংবাদ সম্মেলন সহ ইসি কার্যালয়ে জমা পড়ে একগাদা অভিযোগ। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় শেষ পর্যন্ত রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে শহরের নাইয়াপট্রি এলাকার নারী ভোটাররা। আ’লীগ অফিসে ইট পাটকেল ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। দু’একটি জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলীয় কার্যালয়। যদিও এ হামলার বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের দায়ী করে আ’লীগ। তবে এনিয়ে এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি কলাপাড়া থানায়।
শুক্রবার মধ্যরাতের পর ক্রমশ: পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট। শনিবার সকাল থেকে উৎকন্ঠিত হয়ে পড়া ভোটাররা স্বস্তি ফিরে পায় শহর জুড়ে ব্যাপক আইন
শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে।
কলাপাড়া নির্বাচন অফিসার আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, কলাপাড়ায় এই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অবাধ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠানের জন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। ৯জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ১জন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে মাঠে থাকবে
একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, ১০ জন পুলিশ ও ৯জন আনসার সদস্য। ভোটারদের নিরাপত্তায়
কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করবে ৬ সদস্যের একটি মোবাইল টিম। মাঠে থাকবে ৪০৫ পুলিশ সদস্য নিয়ে গঠিত ৪টি পুলিশ ষ্ট্রাইকিং ফোর্স, ৩০ সদস্য নিয়ে গঠিত ৩টি র্যাব ষ্ট্রাইকিং ফোর্স ও ৪০ বিজিবি সদস্য নিয়ে গঠিত ২টি বিজিবি’র ষ্ট্রাইকিং ফোর্স।
আবদুর রশিদ আরও জানান, ইতোমধ্যে বহিরাগতদের শহর ছাড়তে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কাজে সংশ্লিষ্ট ছাড়া সকল ধরনের ইঞ্জিন চালিত যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।
প্রসংগত, কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন, কাউন্সিলর পদে মোট ৪৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল চন্দ্র হাওলাদার। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ও সাবেক মেয়র হাজী হুমায়ুন সিকদার। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র হাত পাখা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন মো: সেলিম মিয়া। নির্বাচনে মোট ১২,৮৯১ জন ভোটার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদান করবেন। এরমধ্যে মহিলা ভোটার ৬৫৫৭ জন ও পুরুষ ভোটার ৬৩৩৪ জন।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply